শনিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৫

সুমহান ৭ই রবীউল আউওয়াল শরীফ হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস

সমস্ত প্রশংসা, বেশুমার ছানা-সিফত, অসংখ্য দুরূদ ও সালাম, অগণিত শুকরিয়া খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক এবং উনার প্রিয়তম হাবীব সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের জন্য। উনারা অত্যন্ত আদর করে সোহাগ করে মুহব্বত করে খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ হযরত মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাকে হাদিয়া করেছেন সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনাকে।
আর লক্ষ-কোটি শুকরিয়া, বেহিসাব দুরূদ ও সালাম খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ হযরত মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার খিদমতে যিনি আমাদেরকে হাদিয়া করেছেন আমাদের দোজাহানের মাতা, আদরনীয় মা, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনাকে।
নিঃসন্দেহে আজ আমাদের জন্য খুবই খুশির দিন। আজকেই সমস্ত সৃষ্টিকুল তথা কুল-কায়িনাত লাভ করেছিলেন আমাদের প্রাণপ্রিয়া সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনাকে। মহান ৭ই রবীউল আউওয়াল শরীফ। আযিমুশ শান ৭ই রবীউল আউওয়াল শরীফ। রোজ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীমি। শুধু তাই নয়, এ দিন ঈদে মীলাদে উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
আমাদের জানা রয়েছে, যত উম্মত, যত জাতি পৃথিবীতে এসেছেন তাদের সকলের মাঝে আশরাফ বা শ্রেষ্ঠ হচ্ছেন এ উম্মত তথা উম্মতে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আর এ উম্মতে যত ফযীলত রয়েছে তার মধ্যে একটি অন্যতম ফযীলত হচ্ছে এই যে, শুধুমাত্র এই উম্মতই সরাসরি আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে লাভ করেছেন। অর্থাৎ এ উম্মত তথা আমারাই একমাত্র উম্মত যারা সরাসরি আলে রসূল, আওলাদে রসূল তথা আহলে বাইত উনাদের খিদমতের সুযোগ লাভে ধন্য হয়েছি, আর অন্য উম্মতরা এ সুযোগ লাভে ধন্য হতে পারেননি। 
এ কথা আজ কোনো সমঝদার মুসলমানের অজানা নেই যে, মহিলাদের মাঝে মহিলা অঙ্গনে যত আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাশরীফ এনেছেন, আছেন এবং আসবেন উনাদের সকলেরই শ্রেষ্ঠা আমাদের প্রাণপ্রিয়া সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি। তিনি খাছভাবে জাত-ছিফত, যাহির-বাতিন সব দিক থেকেই সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আখাসসুল খাছ আওলাদ।
বেমেছাল নববী নিসবত, প্রগাঢ় নবীপ্রেম সর্বোপরি হযরত মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নিবির মুবারক সান্নিধ্য সাইয়্যিদাতুন নিসায়িল আলামীন উম্মুল উমাম আমাদের হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনাকে পরিপূর্ণরূপে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের রঙ্গে রঞ্জিত করেছেন। উনার পবিত্র জীবন প্রবাহের প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি হযরত উম্মুল মুমিনিন আলাইহাস সালাম উনাদের ক্বায়িম-মাক্বাম। 
সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তরফ থেকে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনাকে দায়িমীভাবে যত মুবারক নাজ-নিয়ামত, ইলম, গায়েবী মদদ, ফায়িয-তাওয়াজ্জুহ হাদিয়া করা হয়েছে নিঃসন্দেহে তার মাঝে সর্বোত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠা হাদিয়া হচ্ছেন, উনার একান্ত প্রাণপ্রিয় মাশুক হযরত মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম। কারণ তিনি যাঁকে লাভ করেছেন, তিনি মহান বারে ইলাহী মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব ও মাহবুব, উনার প্রিয়তম হাবীব নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার লখতে জিগার, কলিজা মুবারক উনা টুকরা মুবারক, উনার মেছাল, উনার মেছদাক, উনার উপমা, কায়িম-মাক্বাম, স্নেহধন্য আওলাদ, শ্রেষ্ঠতম খলীফা, শুধু তাই নয়, তিনি উনার দ্বারাই লালিত-পালিত। সুবহানাল্লাহ! আর উনাকেই সর্বোতভাবে লাভ করেছেন সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি।
ইলম, আমল, ইখলাছে বেমেছাল ব্যক্তিত্ব আমাদের প্রাণপ্রিয়া সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি অতুলনীয় প্রজ্ঞাবতী। ভরপুর ইলমে লাদুন্নীসহ পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র তাফসীর, পবিত্র হাদীছ শরীফ, শরাহ, ইজমা, ক্বিয়াস, ইতিহাস, ভূগোল, অর্থনীতি, ফিকাহ, বিভিন্ন ভাষা বিশেষত আরবী, বাংলা, ইংরেজি, উর্দু, ফার্সীর ব্যাকরণ ও সাহিত্য, ইসলামী আইন, প্রচলিত অন্যান্য আইন, চিকিৎসা শাস্ত্র, বিজ্ঞান, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান, পোশাক বিজ্ঞান, মহাকাশ বিজ্ঞান, বালাগাত ও হিকমত, সমাজকল্যাণ, গণিত, কালামশাস্ত্র ইত্যাদিসহ ইলম ও হুনরের সকল শাখায় রয়েছে উনার আশ্চর্য রকম বিরল ব্যতিক্রমী পান্ডিত্য। মানুষের জানা ও অজানা যত বিষয় রয়েছে, তা সবই রয়েছে উনার জানা। উনার মুবারক দৃষ্টিসীমা এতোটাই প্রসারিত যে, উনার কোনো রূহানী সন্তান তথা মুরীদ কোথায় আছেন তা তিনি উত্তমরূপেই জ্ঞাত। 
সমস্ত জ্ঞানে জ্ঞানী, সর্বগুণে গুণী, আমাদের প্রাণপ্রিয় সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি পরিপূর্ণভাবে দুনিয়া বিরাগী, দায়েমী সুন্নতে মশগুল, পর্দা পালনে কঠোর, পবিত্রতায় বেমেছাল এবং তাক্বওয়াযুক্ত আমলে বলীয়ান। 
সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার মুবারক তাজদীদের সাথে তিনি এতো ওতপ্রোতভাবে জড়িত যে, এ কথা আজ বলাবাহুল্য নয় যে, মহিলাদের মাঝে কেউ মুজাদ্দিদ হলে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনিই মুজাদ্দিদ হতেন। কথাটি শুনতে কারো কারো কাছে স্বাভাবিক না মনে হলেও আমরা কিন্তু এ কথায় তৃপ্ত নই। বরং আমরা বলতে চাই, নুবুওওয়াত ও রিসালতের ধারা অব্যাহত থাকলে এবং মহিলা অঙ্গনে কেউ নবী-রসূল হলে নিশ্চিত নবী ও রসূল হতেন সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি অনবরত মুবারক তাজদীদ ও হিদায়েতের নূর দ্বারা সারা দুনিয়া থেকে কুফরী-শেরেকী, বিদয়াত-বেশরাকে সমূলে ধ্বংস করে হিয়ায়েত ও হক্ব জারী করছেন। উনার পবিত্র ছোহবতে অসহায় মেয়েরা সহায় পেয়ে ধন্য হচ্ছে, বেদিশা মহিলারা সঠিক পথের দিশা পাচ্ছেন, ইজ্জতহীনারা ইজ্জত পাচ্ছেন।
কারামত - ১. জনৈক এক পীরবোন তিনি গোসল করার পর, চুল পানিমুক্ত করার জন্য অর্থাৎ শুকানোর জন্য কাপড় দিয়ে ঝাড়ছিলেন। ঝাড়তে গিয়ে ডান কানের দুলের সাথে কাপড়টি আটকে যায় এবং কানের নিচের অংশ ছিড়ে দুলটি মাটিতে পড়ে যায়। পীরবোন তিনি খুব ব্যথা পান, রক্তক্ষরণ হয়। এ অবস্থায় আমাদের পীরবোন সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার খিদমতে হাজির হলে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি অত্যন্ত মমতায় কানটি হালকা চাপ দিয়ে ধরেন। আশ্চর্য হলেও সত্য কানটি জোড়া লেগে পুনরায় পূর্বের ন্যায় হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!
কারামত - ২. জনৈক আমাদের এক পীরবোনের আঙ্গুলের চামড়া ফেটে রক্ত পড়তো। অনেক ওষুধ খাওয়া হয়েছিল কোনো আরোগ্য হয় নাই। পীরবোনটির বিয়ের সময় দরবার শরীফ উনার বালিকা মাদরাসায় যখন উনাকে হলুদ লাগানো হচ্ছিল, তখন সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি সেই পীরবোনের প্রতি অত্যন্ত দয়ালু দৃষ্টিতে তাকালেন এবং বললেন “আমি তোমার হাতে একটু হলুদ লাগিয়ে দিলে সেরে যাবে”। তিনি হলুদ লাগিয়ে দিলেন, আঙ্গুলগুলি সারা জীবনের জন্য আরোগ্য হয়ে গেল। সুবহানাল্লাহ!
কারামত - ৩. জনৈক আমাদের এক পীরবোন সন্তানসম্ভাবা ছিলেন। উনার পেটে যখন তিন মাসের সন্তান তখন একদিন সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি উনার দিকে অত্যন্ত দয়া ও মায়ার দৃষ্টিতে তাকিয়ে আদরনীয় স্বরে বললেন, “তোমাদের তো একটি ছেলে দরকার।” যদিও আলামত দেখে অনেক মহিলা মন্তব্য করেছিলেন মেয়ে হবে। কিন্তু সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার কথাই সত্য প্রমাণিত হলো। কী আশ্চর্য! সত্যিই যথাসময়ে আমাদের পীরবোনটি একটি ছেলে সন্তান প্রসব করেন। সুবহানাল্লাহ!

..............




উম্মুল উমাম, উম্মুল মুরীদীন, সাইয়্যিদাতুনা নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, হাবীবাতুল্লাহ, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন ক্বায়িম মাক্বামে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!


সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, হাবীবাতুল্লাহ, আমাদের মহাসম্মানিতা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি যে, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার পরিপূর্ণ ক্বায়িম-মাক্বাম এই সম্পর্কে মুজাদ্দিদে আ’যম, মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়া সালাম তিনি স্বয়ং নিজে ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমাদের উম্মুল উমাম, উম্মুল মুরীদীন হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার নিসবত মুবারক সরাসরি সমস্ত হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সাথে। তবে বিশেষভাবে উনার নিসবত মুবারক হচ্ছে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, ত্বাহিরা, ত্বইয়িবা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সাথে এবং সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, ত্বাহিরা, ত্বইয়িবা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার সাথে।” সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার সমস্ত খুছূছিয়াত মুবারকই মহান আল্লাহ পাক তিনি হাবীবাতুল্লাহ, উম্মুল উমাম, উম্মুল মুরীদীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনাকে হাদিয়া মুবারক মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! তবে পার্থক্য হচ্ছে শুধু এতটুকু যে, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন মা আর উম্মুল উমাম, উম্মুল খুলাফা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন উনার আওলাদ। এছাড়া আর কোন পার্থক্য নেই। সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি যেমন পরিপূর্ণরূপে নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হাক্বীক্বী ক্বায়িম-মাক্বাম তেমনিভাবে উম্মুল উমাম, উম্মুল খুলাফা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন পরিপূর্ণরূপে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার হাক্বীক্বী ক্বায়িম-মাক্বাম। সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি যেমন পৃথিবীর ইতিহাসে যত হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা এসেছেন এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত যত হযরত আওলিয়াই কিরাম রহমতুল্লহি আলাইহিম উনারা আসবেন উনাদের প্রত্যেকের সাইয়্যিদ তেমনি সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মু মুজাদ্দিদে আ’যমে ছানী, উম্মুল খুলাফা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন পৃথিবীর ইতিহাসে যত হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা এসেছেন এবং ক্বিয়াম পর্যন্ত যত হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লহি আলাইহিম উনারা আসবেন উনাদের প্রত্যেকের সাইয়্যিদাহ। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছলাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নিসবত মুবারক উনার কারণে যেমন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি না এবং নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি না, এছাড়া সমস্ত মর্যাদা-মর্তবা, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনার অধিকারী; তেমনিভাবে সাইয়্যিদুল মুজাদ্দিদীন, ইমামুল মুজাদ্দিদীন, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার সম্মানিত নিসবত মুবারক উনার কারণে হাবীবাতুল্লা, ত্বহিরা, ত্বইয়িবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল উমাম, উম্মুল মুরীদীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি শুধু যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি না, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি না এবং মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি না এছাড়া সমস্ত মর্যাদা-মর্তবা, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনার অধিকারী। সুবহানাল্লহ!
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি শুধুমাত্র ওহী মুবারক নাযিল হওয়া ব্যতীত সমস্ত প্রকার ইলম মুবারক উনার অধিকারী ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! এই প্রসঙ্গে নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
خُذُوْا نِصْفَ دِيْنِكُمْ مِنْ هٰذِهِ الْحُمَيْرَاءِ
“আপনারা আমার পর সম্মানিত ওহী মুবারক নাযিল হওয়া ব্যতীত সমস্ত প্রকার ইলম উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবেন।” সুবহানাল্লাহ! 
‘ওহী মুবারক নাযিল হওয়া ব্যতীত সমস্ত প্রকার ইলম মুবারক সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার ছিলো’Ñ এই কথা দ্বারা উনার ওহী মুবারক উনার ইলম ছিলো না; সেই বিষয়টি বুঝায় না। বরং মহান আল্লাহ তিনি সরাসরি নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাধ্যম দিয়ে, উনার সম্মানিত ছোহবত মুবারক উনার মাধ্যম দিয়ে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত ওহী মুবারক উনার ইলম মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! অনুরূপভাবে ক্বায়িম-মাক্বামে সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম, উম্মুল খুলাফা, ছাহিবাতু জামিইল ইলম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার বিষয়টি একই হুকুম উনার আওতাভুক্ত। সুবহানাল্লাহ! তিনি সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তথা সমস্ত প্রকার ইলম মুবারক উনার অধিকারী। শুধুমাত্র ওহী মুবারক নাযিল হওয়া ব্যতীত সমস্ত প্রকার ইলম মুবারকই উনার রয়েছে। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাকে সমস্ত প্রকার ইলম মুবারক হাদিয়া মুবারক করেই সৃষ্টি করেছেন। সুবহানাল্লাহ! 
সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, 
عَنْ حَضْرَتْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أُعْطِيْتُ جَوَامِعَ الْعِلْمِ .
“হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমাকে সমস্ত প্রকার ইলম হাদিয়া করা হয়েছে।” সুবহানাল্লাহ! (সুনানে দারু কুত্বনী ৫/২৫৪, দায়লামী শরীফ ১/৪০০) 
এই সম্মানিত হাদীছ শরীফ অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে বুঝা যায় যে, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত প্রকার ইলম মুবারক উনার অধিকারী। সুবহানাল্লাহ! আর উনারই সম্মানিত ফযল ও করম মুবারক-এ উনার সর্বশ্রেষ্ঠ, অদ্বিতীয় হাক্বীক্বী ক্বায়িম-মাক্বাম হিসেবে উনারই সুমহান আওলাদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ছাহিবু ইলমিল আউওয়ালি ওয়াল ইলমিল আখিরি, সাইয়্যিদুল খুলাফা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনিও সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত প্রকার ইলম মুবারক উনার অধিকারী। সুবহানাল্লাহ! এই প্রসঙ্গে মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার শান মুবারক-এ সম্মানিত হাদীছ শরীফ ও সম্মানিত আসমানী কিতাব মুবারক উনাদের মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, 
يُؤْتَوْنَ الْعِلْمَ الْأَوَّلَ وَالْعِلْمَ الْاٰخِرَ
“উনাকে সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত প্রকার ইলম মুবারক হাদিয়া মুবারক করা হবে।” সুবহানাল্লাহ! (দালাইলুন নুবুওওয়াহ লিআবী না‘ঈম ১ম খ- ৩৮ নং পৃষ্ঠ, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১ম খ- ৯৯ নং পৃষ্ঠা, খছাইছুল কুবরা লিস সুয়ূত্বী ১ম খ- ১৮ নং পৃষ্ঠা, মাওয়াহিবুল লাদুন নিয়্যাহ ২/৪০৩, শরহুয যারক্বনী ৭/৪১২ ইত্যাদি)
এখানে يُؤْتَوْنَ শব্দ মুবারকখানা জমা’ বা বহুবচন নেয়া হয়েছে। এর লক্ষ-কোটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে দুটি বিশেষ কারণ হচ্ছে, এক. মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, ছাহিবু ইলমিল আউওয়ালি ওয়াল ইলমিল আখিরি, আওলাদে রসূল মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার তা’যীমার্থে এখানে يُؤْتَوْنَ শব্দ মুবারকখানা জমা’ বা বহুবচন নেয়া হয়েছে। তা’যীমার্থে যে, জমা’ বা বহুবচন শব্দ মুবারক ব্যবহার করা হয়, এর অনেক মিছাল বা দৃষ্টান্ত সম্মানিত কুরআন শরীফ ও সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনদাদের মধ্যে রয়েছে। 
দুই. আর দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিসবত মুবারক উনার কারণে যেমন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা এবং সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত ইলম মুবারক উনার অধিকারী হয়েছেন ঠিক তেমনিভাবে মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, আওলাদে রসূল, মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনিতো অবশ্যই সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত ইলম মুবারক উনার অধিকারী, শুধু তাই নয়, উনার সাথে সম্মানিত নিসবত মুবারক উনার কারণে উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাতই শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা, খাছ করে ক্বায়িম মাক্বামে সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম, উম্মুল খুলাফা, উম্মুল উমাম, ছাহিবাতু জামিইল ইলম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনিও সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত ইলম মুবারক উনার অধিকারী। তাই এখানে يُؤْتَوْنَ শব্দ মুবারকখানা জমা’ বা বহুবচন নেয়া হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং উপরোক্ত দলীলভিত্তিক আলোচনার মাধ্যমে অত্যন্ত সুস্পষ্ট ও অকাট্যভাবে প্রমাণিত হলো যে, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি যেমন সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যাহিরী-বাত্বিনী সমস্ত প্রকার ইলম মুবারক উনার অধিকারী, ঠিক তেমনিভাবে উনার আখাচ্ছুল খাছ হাক্বীক্বী ক্বায়িম-মাক্বাম হিসেবে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল খুলাফা, ছাহিবাতু জামিইল ইলম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনিও সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যাহিরী-বাত্বিনী সমস্ত প্রকার ইলম মুবারক উনার অধিকারী তথা ‘ছাহিবাতু জামিইল ইলম’। সুবহানাল্লাহ!
তার পাশাপাশি এই বিষয়টিও অত্যান্ত সুস্পষ্ট ও অকাট্যভাবে প্রমাণিত হলো যে, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল খুলাফা, উম্মুল উমাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন সর্বদিক থেকে পরিপূর্ণরূপে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার পরিপূর্ণ হাক্বীক্বী ক্বায়িম-মাক্বাম। সুবহানাল্লাহ!
তাই আমাদের প্রত্যেকের জন্য ফরয হচ্ছে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল খুলাফা, উম্মুল উমাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার হাক্বীক্বী গোলামী করা, উনার সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক, উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম দেয়া, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করা।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে সেই তাওফীক্ব দান করুন। আমীন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন